রামকৃষ্ণ আশ্রম সবার জন্য না
রামকৃষ্ণ আশ্রমের রান্না এতটাই বাজে আমি ওপেন চ্যালেন্জ দিয়ে বলছি, আমার শৈশবকাল থেকে এখন পর্যন্ত যা খাবার খেয়েছি, যত জায়গায় খাবার খেয়েছি তারমধ্যে সবচেয়ে নোংরা টেস্টের খাবার আশ্রমের। হোটেলের বাবুর্চিদের কাছ থেকে এদের রান্না শিখে আসা উচিত। যাই হোক আসল ঘটনায় আসি।
রুমের সামনে দাঁড়িয়ে একদিন কোনো এক বড়ভাইকে বললাম, আজকে সকালের খাবার এত বিচ্ছিরি টেস্ট হয়েছে। মুখে দিলেই বমি আসে। পাশ থেকে রামকৃষ্ণ আশ্রমের পোষা সন্ত্রাসী বখাটে এক ছেলে তেড়ে আসল। বখাটে গুন্ডার নাম গৌতম সূত্রধর (সম্ভবত)। ২০১৩ সালের ঘটনা তাই পারফেক্টলি মনে করতে পারছি না। আর এই বখাটের নাম মনে করার ইচ্ছাও আমার নেই। পড়াশুনা করত চাঁদপুর সরকারি কলেজের গণিত বিভাগে। রিজাল্ট নিয়ে আর কিছু না বলি। একটা বখাটের রিজাল্ট কেমন হয় তা তো জানাই আছে আপনাদের। সে তেড়ে এসে বলল, “রামকৃষ্ণ আশ্রম সবার জন্য না”।
তাকে আমি কোনো কিছুই রিপ্লাই করিনি। কারণ একটা বখাট গুন্ডার সাথে আমি কথা বলে আমার ওয়েট কমাতে চাই না। ক্লাস বলে একটা শব্দ আছে তো। সেদিন বাবাকে কল দিয়ে বললাম, আমাকে একটা বাসা ভাড়া করে রাখতে পারতেন। কিন্তু কি পাপ করলাম, এদের মত বখাটে জানোয়ারদের সাথে রাখলেন? যেখানে কার সাথে কে কিভাবে আচরণ করবে সেই আচরণের শিক্ষাটুকু পায় নাই? এরা তো মানুষ না, এদের চেয়ে বস্তির মানুষের ব্যবহার ভালো।
তবে সেই আশ্রমের কমিটির লোক কল্পতরু উৎসবে আমার বাড়িতে চাঁদা তুলতে গেলে খাবারের স্বাদ কেমন হওয়া উচিত আমার মা হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দেয়। রামকৃষ্ণ আশ্রমে মাত্র ২ ধরণের তরকারি দিয়ে দুপুরবেলা এবং রাত্রিবেলা খাওয়ানো হত। আর সকালে ১টি মাত্র তরকারি দিয়ে খাওয়ানো হত। আমার বাড়িতে প্রতিবেলা ৪ ধরণের তরকারি ছাড়া কোনোদিন ভাত খাইনি। তবে মা অসুস্থ থাকলে ২ বা ৩ ধরণের তরকারি দিয়ে ভাত খেতাম। আশ্রম কমিটির লোকজন যেদিন চাঁদা কালেকশনে যায়, সেদিন ৮ প্রকারের তরকারি রান্না করে খাওয়ানো হয়। প্রতিটা তরকারির স্বাদ তারাই তাদের তরকারির সাথে তুলনা করুক। তবে আমি আমার মায়ের সন্তান হিসেবে ওই ক্লাসলেস তরকারির সাথে মায়ের হাতের রান্না করা তরকারির তুলনা করে মহাপাপ করতে চাই না এবং মায়ের মনে আঘাতও দিতে চাই না।
আশ্রমের পোষ্য বখাটে সন্ত্রাসী সেদিন ঠিকই বলেছিল- “রামকৃষ্ণ আশ্রম সবার জন্য না”। এবার আমিও বলি আশ্রম শুধুমাত্র গৌতম সূত্রধরদের মত ক্লাসলেসদের জন্য, বখাটেদের জন্য, কুলাংগারদের জন্য, ভিখারির জন্য। যে ভিখারি কোনোদিন ফার্স্টক্লাস খাবার খায় তো নাই এবং চোখেও দেখে নাই তার জন্য। আশ্রম আমাদের মত তিন বেলা থ্রি স্টার, ফাইভ স্টার হোটেলের বিরিয়ানিখোরদের জন্য না।
২০১৩তে আশ্রমের প্রতি প্লেট ভাত তরকারির মূল্য ছিল ৩৫ টাকা। জাতির কাছে প্রশ্ন- ৩৫ টাকায় কি খাওয়ানো হয়? ৩৫ টাকার খাবারের কোয়ালিটি কেমন? ৩৫ টাকার খাবার কারা খায়?
আরে ঢাকায় ফুটপাতের একটা খোলামেলা সাধারণ হোটেলে মাছ ভাত খেলে ৬০ টাকার নিচে বিলও আসবে না। যেখানে রামকৃষ্ণ আশ্রমের খাবার ৩৫ টাকা, সেখানে আজকে আমি প্রতিমাসে শুধুমাত্র খাবারের পিছনে সর্বনিম্ন ১৫ হাজার টাকা খরচ করি। বরং গরীব মানুষদের বিরিয়ানি দিয়ে লাঞ্চ আর ডিনার করাই।
এইজন্যই সকল বাবা মায়ের কাছে অনুরোধ করি, আপনার সন্তানকে জানোয়ারদের কাছে রেখে কুত্তার ঘু না খাইয়ে সাধ্যমত একটা ভালো হোস্টেল বা সাবলেটে রাখুন। সাধারণ হোস্টেলের খাবার মুখে দিলেও ৬০ টাকা বিল দিয়ে যে খাবার খাবে তাতে আপনার সন্তান আপনাদেরকে ভালোবাসবে। অন্তত আমার মত বাবা মা’কে কল করে ইঁদুর পড়া কুত্তার ঘুয়ের স্বাদের খাবার খাওয়ার কথা শুনাবে না।